মা দুর্গার নানান রূপ ও 108 নাম ::----
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপের পূজা প্রচলিত, বিশেষ করে নবরাত্রির সময়, এবং
12 মাসে বারো রূপে পুঁজিত হন মা দুর্গা।
নবরাত্রির সময় নয়টি রূপকে নবদুর্গা নামেও ডাকা হয়।
এর বাইরেও, দশমহাবিদ্যা নামে দেবী দুর্গার আরও দশটি রূপের পূজা হয়।
এই রূপগুলি প্রত্যেকটিকে আলাদা আলাদা সময়ে পূজা করা হয়।
★★নবদুর্গা:----
নবরাত্রির সময় এই নয়টি রূপে দেবী দুর্গার পূজা করা হয়। এই রূপগুলি হল - ●1>শৈলপুত্রী, ●2>ব্রহ্মচারিণী, ●3>চন্দ্রঘণ্টা, ●>4কুষ্মাণ্ডা,
●5>স্কন্দমাতা, ●6>কাত্যায়নী, ●7>কালরাত্রি, ●8>মহাগৌরী এবং ●9>সিদ্ধিদাত্রী.
===================
★★দশমহাবিদ্যা:-----
এই দশটি রূপ হলো -----
●1>কালী, ●2>তারা, ●3>ত্রিপুরা সুন্দরী, ●4>ভুবনেশ্বরী, ●5>ভৈরবী, ●6>চিন্নামস্তা, ●7>ধূমাবতী, ●8>বগালামুখী, ●9>মাতঙ্গী এবং ●10>কমলা.
অন্যান্য রূপ:
দেবী দুর্গার অনেক রূপের কথা প্রচলিত। যেমন, ★ভদ্রকালী, ★চণ্ডিকা ইত্যাদি.
এছাড়াও দেবীর
"বার মাসে বার রূপ" বলতে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপের পূজা ও আরাধনা করা হয়।
====================
★★বারো মাসে মা দুর্গার বারো রূপে দেবীবরণ ও পূজা হয়।
●1> বৈশাখ মাস–এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন গন্ধেশ্বরী।
বাংলা বছরের প্রথম মাস হল বৈশাখ। এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন গন্ধেশ্বরী। এই দেবীর আরাধনা করেন মুলত গন্ধবণিকরা। কথিত আছে এই দেবীর আরাধনায় রমরমিয়ে বেড়েছেতাদের ব্যবসা। বেড়েছে গন্ধদ্রব্যের প্রাচুর্য।
●2> জ্যৈষ্ঠ মাস–এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন ফলহারিণী।
জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী নামেই দেবী পূজিত হন। দেবীর এই রূপকে কর্মফল হরণকারিণী নামেও পরিচিত। এই দেবীর আরাধনার ফলেকর্মফল থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায় বলে মনে করেছেন অনেকে।
●3> আষাড় মাস– এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন "মা কামাক্ষ্যা" ।
অম্বুবাচী তিথিতেই মহাধুমধামের সঙ্গে পূজিত হন দেবী কামাক্ষ্যা। তিনিই হলেন উর্বরতার দেবী।
●4> শ্রাবণ মাস–দেবী শাকম্ভরী।
শ্রাবণ মাসে দেবী পূজিত হন শাকম্ভরী রূপে। অনেকে মনে করেন এই দেবীর কৃপাতেই মাঠঘাট ভরে ওঠে শাকসব্জিতে। যদিওআদিশক্তির এই রূপের পুজো এখন বিরল
●5> ভাদ্র মাস– দেবী পার্বতী।
এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন দেবী পার্বতী। কথিত আছে এই মাসেই ঘটেছিল মহাদেব এবং পার্বতীর প্রথম মিলন।
●6> আশ্বিন মাস– দেবী দুর্গা।
এই মাসেই হয় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গাপূজা।রামায়ণে বর্ণিত অকালবোধনে রামচন্দ্র দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন । তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তি ঘটেছে দেবীর মূর্তিরও। এখন দেবী পূজিত হন মহিষাসুরমর্দিনী এবং চার সন্তানের জননী রূপে।
●7> কার্তিক মাস– দেবী জগদ্ধাত্রী।
এই মাসে আদিশক্তিপূজিত হন জগদ্ধাত্রী রূপে। কথিত আছে – একবার চার দেবতা ইন্দ্র, অগ্নি, বায়ু ও চন্দ্র খুব অহংকারী হয়ে উঠেছিলেন। তারা ভুলে গিয়েছিলেন মহাশক্তির শক্তিতেই তারা বলীয়ান। তখন দেবী জগদ্ধাত্রী রূপে তাদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন। জগতের রক্ষাকারিণী দেবী হলেন দেবী জগদ্ধাত্রী।
●8> অগ্রহায়ণ মাস–দেবী কাত্যায়নী।
অগ্রহায়ণ মাসে কাত্যায়নী দেবীর পুজো হয়ে থাকে। এইদেবীকে বিবাহ এবং সন্তানকামনা পূরণকারিনী দেবী। পুরাণ অনুযায়ী, ব্রজের গোপিণীরা কৃষ্ণকে স্বামীরূপে পাওয়ার ইচ্ছায় এই দেবীর পুজো করতেন মাঘ মাসে। কিন্তু বাংলার নবদ্বীপের রাসযাত্রায় অগ্রহায়ণ মাসেই কাত্যায়নী দেবীর পুজোর প্রচলন আছে।
●9> পৌষ মাস– দেবী পৌষকালী।
এই মাসে পৌষকালীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। আদিশক্তির এই রূপকে বলা হয় মোক্ষদানকারিণী। পৌষকালীর পুজোয় দেবীকে পৌষ মাসের অন্যতম সবজি মুলো নিবেদন করা হয়ে থাকে।
●10> মাঘ মাস– দেবী রটন্তীকালী।
এ মাসেও দেবী কালীর আরাধনা করা হয়। মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে রটন্তীকালীর পুজো করা হয়। দেবীর এই রূপকে গৃহশক্তির রক্ষাকারিণীও বলা হয়ে থাকে। দেবীর আরাধনায় সাংসারিক জীবন সুখের হয় বলেই মনে করেন অনেকে।
●11> ফাল্গুন মাস–দেবী সঙ্কটনাশিনী।
আদিশক্তি এইমাসে সঙ্কটনাশিনী রূপে পূজিত হন। জীবনসঙ্কট , রোগব্যধি এবং অন্যান্য বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য এই দেবীর আরাধনা করাহয়।
●12> চৈত্র মাস– দেবী বাসন্তী বা দেবীঅন্নপূর্ণা।
এই মাসে ধরিত্রীকে শস্যপূর্ণ করতে দেবী বাসন্তীর আরাধনা করা হয়। অনেকে চৈত্র মাসে আরাধ্যা দেবীকে অন্নপূর্ণা রূপেও পুজো করে থাকেন।
===========================
★দেবী দুর্গার108 নাম মাহাত্ম্য (সংক্ষেপে)লিখতেহবে।
দেবী দুর্গা হলেন বিশ্বজগতের মা।
জনপ্রিয় জগৎ জননী দেবী, দুর্গার অনেক অবতার রয়েছে: কালী, ভগবতী, ভবানী, অম্বিকা, ললিতা, গৌরী, কন্দলিনী, জাভা, রাজেশ্বরী এবং আরও অনেক কিছু। এই সকল দেবীই বিভিন্ন রূপে আবির্ভূত হতে পারেন।
দুর্গা যখন নিজের রূপে আবির্ভূত হন, তখন তিনি নয়টি পদের একটি রূপে আবির্ভূত হন । তারা হলেন ●1>স্কন্দমাতা, ●2>কুসুমন্দা, ●3>শৈলপুত্রী, ●4>কালরাত্রি, ●5>ব্রহ্মচারিণী, ●6>মহাগৌরী, ●7>কাত্যায়নী, ●8>চন্দ্রঘন্টা এবং ●9>সিদ্ধিদাত্রী।
দুর্গার ১০৮টি নাম তাঁর জটিল প্রকৃতির প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা তাঁর অসংখ্য গুণাবলী, রূপ ও ঐতিহ্যের বর্ননা করে এবং ১০৮ সংখ্যার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য তুলে ধরে। দুর্গার প্রতিটি নাম তাঁর ঐশ্বরিক প্রকৃতি, গুণাবলী এবং কর্মের একটি ভিন্ন দিককে ধারণ করে।
দুর্গার ১০৮টি নামের ইতিহাস::---
ভগবান শিব দেবী দুর্গার প্রতি তাঁর ভক্তি প্রকাশের জন্য এবং তাঁকে খুশি করার জন্য তাঁর ১০৮টি নাম বলেছিলেন ।
এই নামগুলি পুরাণে পাওয়া যায়, যা পবিত্র হিন্দু সাহিত্যের একটি বিশাল সংগ্রহ, যাকে বলা হয় দেবী মাহাত্ম্যম বা দেবীমাহাত্ম্যম ( দেবীর মহিমা ), যা দেবী দুর্গার যুদ্ধ এবং রাক্ষস রাজা মহিষাসুরের উপর শেষ পর্যন্ত বিজয়ের গল্প বর্ণনা
করে।
প্রাচীন ভারতীয় ঋষি মার্কণ্ডেয় কর্তৃক সংস্কৃত ভাষায় প্রায় ৪০০-৫০০ খ্রিস্টাব্দে রচিত, এই হিন্দু ধর্মগ্রন্থটি দুর্গা সপ্তশত বা কেবল চণ্ডী নামেও পরিচিত ।
নবরাত্রী এবং দুর্গাপূজার উৎসবে , ভক্তরা দেবীর ১০৮টি নামে প্রার্থনা করেন।
দেবী দুর্গার ১০৮ টি নাম
( ১) সতী,=="সতী" দক্ষের কন্যা ও
শিবপত্নী ,পতিব্রতা নারী।
( ২) সাধ্বী=তপস্বী,পবিত্র নারী।
( ৩) ভবপ্রীতা=অনুভূতির দীপ্তি
( ৪) ভবানী==জীবনদাতা', 'প্রকৃতির শক্তি'
বা সৃজনশীল শক্তির উৎস'
( ৫)ভবমোচনী,
( ৬) আর্য্যা,=দেবী
( ৭) দুর্গা,
( ৮) জয়া,
( ৯)আদ্যা =আদিম বাস্তবতা।
( ১০) ত্রিনেত্রা,
( ১১) শূলধারিণী,
( ১২)পিনাকধারিণী,
( ১৩ ) চিত্রা,
( ১৪) চন্দ্রঘণ্টা,
( ১৫)মহাতপা,
( ১৬ ) মনঃ,
( ১৭) বুদ্ধি,
( ১৮ ) অহঙ্কার==যিনি গর্বে পূর্ন।
( ১৯)চিত্তরূপা,
( ২০ ) চিতা,
( ২১ ) চিতি,
( ২২)সর্বমন্ত্রময়ী,
( ২৩ ) নিত্যা,
( ২৪) সত্যানন্দস্বরূপিণী,
( ২৫) অনন্তা==অসীম অপরিমেয়।
( ২৬) ভাবিনী==বিশ্বজগতের মাতা।
( ২৭) ভাব্যা=
( ২৮) ভব্যা
( ২৯) অভব্যা,=ভয়ঙ্করী।
( ৩০) সদাগতি,
( ৩১ ) শাম্ভবী,
( ৩২)দেবমাতা,
( ৩৩ ) চিন্তা,
( ৩৪ ) রত্নপ্রিয়া,
( ৩৫)সর্ববিদ্যা,
( ৩৬ ) দক্ষকন্যা,
( ৩৭)দক্ষযজ্ঞবিনাশিনী,
( ৩৮ ) অপর্ণা==জযিনি উপবাসের সময় পাতাও খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
( ৩৯)অনেকবর্ণা==যার একাধিক বর্ণ
আছে।
( ৪০) পাটলা,
( ৪১ ) পাটলাবতী,
( ৪২)পট্টাম্বরপরিধানা,
( ৪৩) কলমঞ্জীররঞ্জিনী,
( ৪৪)অমেয়বিক্রমা,
( ৪৫ ) ক্রূরা,
( ৪৬ ) সুন্দরী,
( ৪৭)সুরসুন্দরী,
( ৪৮ ) বনদুর্গা,
( ৪৯ ) মাতঙ্গী,
( ৫০)মতঙ্গমুনিপূজিতা,
( ৫১ ) ব্রাহ্মী,
( ৫২) মাহেশ্বরী,
( ৫৩) ঐন্দ্রী,=যিনি ইন্দ্রকে শক্তি দেন।
( ৫৪) কৌমারী,
( ৫৫) বৈষ্ণবী,
( ৫৬)চামুণ্ডা,
( ৫৭ ) বারাহী,
( ৫৮ ) লক্ষ্মী,
( ৫৯)পুরুষাকৃতি,
( ৬০ ) বিমলা,
( ৬১ ) উৎকর্ষিণী,
( ৬২)জ্ঞানা,
( ৬৩ ) ক্রিয়া,
( ৬৪ ) সত্যা,
( ৬৫ ) বুদ্ধিদা,
( ৬৬)বহুলা== যার বিভিন্ন রূপ ও প্রকাশ
রয়েছে।
( ৬৭ ) বহুলপ্রেমা==যিনি সকলের প্রিয়।
( ৬৮) সর্ববাহনবাহনা,
( ৬৯)নিশুম্ভনিশুম্ভহননী,
( ৭০ ) মহিষাসুরমর্দিনী,
( ৭১)মধুকৈটভহন্ত্রী,
( ৭২) চণ্ডমুণ্ডবিনাশিনী,
( ৭৩)সর্বাসুরবিনাশা,
( ৭৪ ) সর্বদানবঘাতিনী,
( ৭৫)সর্বশাস্ত্রময়ী,
( ৭৬) সত্যা,
( ৭৭ ) সর্বাস্ত্রধারিণী,
( ৭৮) অনেকশস্ত্রহস্তা==যিনি অনেক অস্ত্র
ধারণ করেন।
( ৭৯) অনেকাস্ত্রধারিণী,
( ৮০) কুমারী,
( ৮১ ) কন্যা,
( ৮২) কৈশোরী,
( ৮৩) যুবতী
( ৮৪) যতি,
( ৮৫ ) অপ্রৌঢ়া==যিনি কখনও বৃদ্ধ
হয়না।
( ৮৬ ) প্রৌঢ়া,
( ৮৭)বৃদ্ধমাতা,
( ৮৮) বলপ্রদা,
( ৮৯ ) মহোদরী,
( ৯০)মুক্তকেশী,
( ৯১) ঘোররূপা,
( ৯২ ) মহাবলা,
( ৯৩)অগ্নিজ্বালা==যিনি আগুন ছড়াতে
সক্ষম
( ৯৪ ) রৌদ্রমুখী,
( ৯৫) কালরাত্রি,
( ৯৬) তপস্বিনী,
( ৯৭ ) নারায়ণী,
( ৯৮ ) ভদ্রকালী,
( ৯৯)বিষ্ণুমায়া,
( ১০০ ) জলোদরী,
( ১০১ ) শিবদূতী,
( ১০২ )করালী,
★( ১০৩ ) অনন্তা,
( ১০৪ ) পরমেশ্বরী,
( ১০৫ )কাত্যায়নী,
( ১০৬ ) সাবিত্রী,
( ১০৭ ) প্রত্যক্ষা এবং
( ১০৮ ) ব্রহ্মবাদিনী।
(জয় মা দূর্গা)
=========================